এম রাসেল সরকার: ঈদুল আযহা সামনে রেখে এরই মধ্যে রাজধানীতে সক্রিয় হয়ে উঠেছে মৌসুমি অপরাধীরা। অপতৎপরতা শুরু করেছে ছিনতাইকারী গ্রুপগুলো। বাণিজ্যিক কিংবা শপিংমল এলাকার জনসমাগম স্থানে এসব অপরাধী ওতপেতে আছে। ছিনতাই করতে বেছে নিচ্ছে অভিনব কৌশল।
ছিনতাইকারীদের কবলে পড়া ব্যবসায়ী ফারুক একজন মৌসুমী ফল ব্যবসায়ী, বাড়ি তার চাঁপাইনবাবগঞ্জ।চাঁপাইনবাবগঞ্জে আমের বাগান কিনে ঢাকাতে সেই আম বিক্রি করেন। প্রতিবছরের ন্যায় এবারও ফারুক নিজের সর্বস্ব দিয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জে আমের বাগান কিনেন এবং তিনি ঢাকায় থেকে চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে পাঠানো আম সংগ্রহ করেন এবং যাত্রাবাড়ী ফলের আড়তে সেই আম বিক্রি করে দুই চার পয়সা আয় করেন।
বৃহস্পতিবার ০৬ জুন ভোর ০৪ টা ৩০ ঘটিকার সময় ঢাকা সবুজবাগস্থ ওহাব কলোনি নিজের ভাড়া বাসা থেকে অটো রিক্সা যোগে যাত্রাবাড়ী ফলের আড়তের উদ্দেশ্যে রওনা করেন। ফারুকের অটো রিক্সা মুগদা থানাধীন ওয়াসারোডস্ত কাজিরবাগ গলির মুখে পৌছা মাত্র পূর্ব থেকে উৎপেতে থাকা ২ থেকে ৩ জন ছিনতাইকারী চাপাতি সহ তার উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে এবং তার সঙ্গে থাকা আম কেনার পঞ্চাশ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টা করেন। ফারুক টাকা দিতে না চাইলে ছিনতাইকারীরা চাপাতি দিয়ে তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতে আঘাতে ক্ষতবিক্ষত করে কিন্তু ব্যবসায়ী ফারুক নাছোড়বান্দা কিছুতেই নিজের সম্বল খোয়াবেন না। তিনি নিজেও ছিনতাই কারীদের পাল্টা আক্রমণ করেন এবং একাই লড়াই চালিয়ে যায়।
ফারুকের দৃঢ় মনোবল এবং সাহসিকতার কাছে ছিনতাইকারীরা হার মানতে বাধ্য হয়। ফারুকের ডাক চিৎকারে ইতিমধ্যেই আশেপাশে লোকজন ফারুক কে সাহায্য করার জন্য এগিয়ে আসতে থাকেন। ফারুক স্থানীয়দের সহায়তায় একজন ছিনতাইকারীকে আটক করতে সক্ষম হয়। স্থানীয় জনগণ উত্তম মাধ্যম দিয়ে ছিনতাইকারীকে পুলিশে সোপর্দ করে এবং অপর ২ জন ছিনতাইকারী ফারুকের টাকা ও মোবাইল নিয়ে পালিয়ে যায়। ছিনতাইকারীদের এই চক্রকে গ্রেফতারের জন্য মুগদা থানা পুলিশের একাধিক টিম কাজ করছে।
ফারুকের এই সাহসিকতার ইতিমধ্যে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগনের দৃষ্টিগোচর হয়। সংবাদ পেয়ে উপ পুলিশ কমিশনার (মতিঝিল) জনাব হায়াতুল ইসলাম খান মৌসুমী ফল ব্যবসায়ী ফারুককে তার সাহসিকতার জন্য ধন্যবাদ জানান। তাহার চিকিৎসা, ওষুধ ও সাময়িক ব্যয় মেটানোর জন্য তাৎক্ষণিক ১০ হাজার টাকা পুরস্কার প্রদান করেন। অফিসার ইনচার্জ মুগদা থানা তারিকুজ্জামান ভিকটিম ফারুকের চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন।