ডেক্স রিপোর্টঃ গণমাধ্যমকর্মীদের কাজে অসহযোগীতা, অসস্মান ও অসৌজন্যমুলক আচারণের কারনে যশোরের শার্শা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নয়ন কুমার রাজবংশীর শার্শা উপজেলার সকল ধরনের সংবাদ বর্জনের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন উপজেলার সকল গণমাধ্যমকর্মীরা।
বৃহস্পতিবার সকালে শার্শা উপজেলার গণমাধ্যম কর্মীদের একটি বৈঠকের মাধ্যমে প্রতিবাদ জানাতে সংবাদ বর্জনের এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
গণমাধ্যমকর্মীরা জানান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে কোন সংবাদ সংগ্রহের জন্য গেলে তার অফিস কক্ষে ঢোকার অনুমতি বা তথ্য প্রকাশে অনিহা করেন। নির্বাচনের সময় গণমাধ্যম কর্মীদের পর্যবেক্ষণ কার্ড নিয়ে নানান ভাবে হয়রানি করেন। এছাড়া এশিয়ান টিভির ১১তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীতে নির্বাহী কর্মকর্তাকে প্রধান অতিথি করে দাওয়াত দিলে তিনি গ্রহন করেন। তবে প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীর দিনে তার অফিস চত্বরে উপজেলার সাংবাদিকদের দুই ঘন্টা অফিসের নিচে দাঁড় করিয়ে রেখে পরে জানান তিনি নিচে নামতে পারবেন না। এখানে র্যালি হবে না, কেক যদি অফিসে আনতে পারেন তবে কেটে দিচ্ছি।
জানা গেছে, এদিন তার তেমন কোন গুরুত্বপূর্ন কাজ ছিলো না, তারপরেও অনুষ্ঠান নিয়ে এমন আচরণ মর্মাহত করেছে গণমাধ্যম কর্মীদের।
বিষয়টি নিয়ে উপজেলা চেয়ারম্যান দেখবেন বলে আস্তত্ব করলেও গত ৩ দিনে এ নিয়ে কোন পদক্ষেপ না নেওয়ায় বাধ্য হয়ে গণমাধ্যমকর্মীরা উপজেলা প্রশাসনে সব ধরনের সংবাদ বর্জনের ডাক দেন।
শার্শা প্রেসক্লাবের সভাপতি ইয়ানুর রহমান জানান, ২৫ বছর ধরে শার্শা উপজেলাতে সাংবাদিকতা করছি। উপজেলা প্রশাসন সাংবাদিক একে অপরের সহযোগীতা করেছি। তবে বর্তমান ইউএনও নয়ন কুমার রাজবংসীর মত এমন অসামাজিক কর্মকর্তা আগে দেখিনি।
বেনাপোল বন্দর প্রেসক্লাবের সভাপতি শেখ কাজিম উদ্দীন বলেন, বর্তমান নির্বাহী কর্মকর্তা অফিসের বাইরে বের হন কম। অফিসে বসে সময় পার করেন। এতে নানা অনিয়ম বেড়েছে এলাকায়। আইন শৃঙ্খলার দারুন অবনতি হয়েছে। উন্নয়নের স্বার্থে এমন এউএনওকে প্রত্যাহার চাইছি।
সাংবাদিক নেতা আমিনুর রহমান জানান, এলাকার মানুষের সাথে মিলে মিশে উন্নয়নের স্বার্থে কাজ করবেন ইউএনও। কিন্তু তিনি মানুষের সাথে মিশতে চান না। তার কাছে সব থেকে বেশি অবহেলার পাত্র সংবাদকর্মীরা। কাউকে মুল্যায়ন করেন না তিনি। এতে এলাকার সাধারন মানুষ, রাজনীতিবিদ ও সাংবাদিক সবাই তার এমন আচারণে ক্ষুব্ধ।
দৈনিক প্রতিদিনের কথা পত্রিকার সাংবাদিক আনিছুর রহমান জানান, মানুষের সাথে যিনি মিশতে সংকোচ বোধ করেন। তিনি কিভাবে শার্শার মানুষের অভিবাবক হবেন। আমরা এ উপজেলাতে একজন সামাজিক নির্বাহী কর্মকর্তা চাইছি।
বেনাপোল বন্দর প্রেসক্লাবের সাধারন সম্পাদক ও সময় টিভির স্টাফ রিপোর্টার আজিজুল হক জানান, দেশ আধুনিক থেকে স্মার্টের দিকে যাচ্ছে। প্রশাসন আর সাংবাদিক উভয়ের মধ্যে সমন্বয় না থাকলে উন্নয়ন মুলক কাজ ব্যহত হয়। ইউএনও নয়ন কুমার রাজবংশি পরস্পরের মধ্যে সুসম্পর্ক ধরে রাখতে ব্যর্থ হয়েছেন।
সীমান্ত প্রেসক্লাব বেনাপোলের সেক্রেটারি ও আনন্দ টিভির প্রতিনিধি আইয়ুব হোসেন পক্ষী জানান, বিষয়টি সুরাহ না হওয়া পর্যন্ত উপজেলার সব সংবাদ বর্জন থাকবে। এরমধ্যে তার এমন আচারনের বিষয়ে (ইউএনও) দুঃখ প্রকাশ না করলে পরে মানবন্ধনসহ নতুন কর্মসুচী গ্রহন করা হবে।
এদিকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার অসৌজন্য মুলক এমন আচরণে ক্ষোভ জানিয়ে সংবাদ বর্জন ও প্রত্যাহারের পক্ষে সমর্থন দিয়েছেন একুশে টেলিভিশন ও কালের কন্ঠ পত্রিকার সিনিয়র রিপোর্টার জামাল হোসেন, ইন্ডিপেন্ডেন্ট টেলিভিশনের আব্দুর রহিম, এসএ টিভির শেখ নাসির উদ্দীন, চ্যানেল এস ও মানবজমিনের ইসমাইল হোসেন, ডিডিপি টেলিভিশন ও দেশ প্রতিদিন এর উপজেলা প্রতিনিধি এবং সমাজের চোখ পোর্টালের সম্পাদক ও প্রকাশক এস এম মারুফ, গ্লোবাল টেলিভিশনের বেনাপোল প্রতিনিধি রাসেল ইসলাম, নাগরিক টিভির ওসমান গনি, এশিয়ান টিভির সেলিম আহম্মেদ, বাংলা টিভির আরিফুল ইসলাম, যায় যায় দিনের জিএম আশরাফ, দৈনিক লোকসমাজের প্রতিনিধি মবিরুল ইসলাম মনি, দৈনিক যশোর পত্রিকার প্রতিনিধি জসিম উদ্দিন, দৈনিক রানানের আরিফুর রহমান, গ্রামের কন্ঠ পত্রিকার জাহিদ হাসান, সাংবাদিক খোরশেদ আলম, সুমন হোসাইন, ইকরামুল হোসেন, মেহেদী হাসানসহ উপজেলায় কর্মরত বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকগণ।