চনপাড়া বস্তির অপরাধ সাম্রাজ্যের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে বেপরোয়া শমশের আলী মেম্বার

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
আপডেটঃ : মঙ্গলবার, ১২ ডিসেম্বর, ২০২৩

এম রাসেল সরকার: নারায়ণগঞ্জ জেলার রূপগঞ্জ উপজেলাধীন কায়েতপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চনপাড়া বস্তির নিয়ন্ত্রক বজলুর রহমান ওরফে বজলু মেম্বার মারা যাওয়ার পর নতুন করে অস্ত্রধারী,সন্ত্রাসী ও মাদক ব্যবসায়ীদের গডফাদারের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে নব নির্বাচিত মেম্বার শমসের আলী। চনপাড়ায় সন্ত্রাসী একটি গোষ্ঠীর নেতৃত্ব দিচ্ছেন কায়েতপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের সদ্য নির্বাচিত মেম্বার শমসের আলী।

চনপাড়া বস্তিরএকক নিয়ন্ত্রক হতে গিয়ে হেন অপরাধ নেই যা করছেন না এই শমসের আলী মেম্বার।অস্ত্র,বিস্ফোক, ছিনতাই, মারামারি মামলা সহ অন্তত ১০টি মামলার আসামি শমসের মেম্বার। শমশের আলী মেম্বার রূপগঞ্জ উপজেলার কায়েতপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের ৫ নং ওয়ার্ডের শেখ রাসেল পুনর্বাসন কেন্দ্রের বাসিন্দা। এই এলাকার বাসিন্দা হাসমত আলীর ছেলে শমসের আলী মেম্বার।

চনপাড়া বস্তির দীর্ঘ বছরের গডফাদার বজলু মারা গেলেও বস্তিবাসীর শান্তিতে থাকার স্বপ্ন অধরাই রয়ে গেছে। প্রায়ই হামলা আর গোলাগুলির ঘটনা ঘটছে চনপাড়া পুনর্বাসন কেন্দ্র এলাকায়, যা বেশি পরিচিত চনপাড়া বস্তি নামে। মাদক কারবার থেকে শুরু করে অপরাধ জগতের আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দুই গ্রুপের মুখোমুখি অবস্থানে আতঙ্কিত এলাকাবাসী। এখানে বাড়ছে খুনোখুনির আশঙ্কা।কয়েক মাসের ব্যাবধানে এ অঞ্চলে অন্তত বড় ধরনের ৭টি হামলা, ভাঙচুর ও গুলির ঘটনা ঘটেছে।

এতে গুলিবিদ্ধসহ আহত হয়েছেন ৪০ জনেরও বেশি নারী-পুরুষ। হামলার শিকার হয়ে কেউ হারিয়েছেন চোখের দৃষ্টি, কারও হাত হয়েছে অকেজো, কেউ হারিয়েছেন চলাফেরার ক্ষমতা।

কায়েতপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের একজন বর্তমান মেম্বার জানান, শমসের মেম্বার খুব খারাপ লোক, ওর ভয়ে আমরা সব সময় আতঙ্কিত থাকি। তার অপরাধ সাম্রাজ্য বিস্তৃত হয়ে বজলু কে ছাড়িয়ে গেছে। রূপগঞ্জের কায়েতপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের ৯ নম্বর ওয়ার্ডে চনপাড়া এলাকা ডাকাত দল, অস্ত্র ব্যবসায়ী, অপহরণকারী, চাঁদাবাজ, অজ্ঞান-মলম পার্টিসহ সব ধরনের অপরাধী চক্রের নিরাপদ আস্তানা। এখানে মাদক কেনাবেচা ও সেবন চলে প্রকাশ্যে।

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও স্থানীয় লোকজন জানায়, প্রায়ই চনপাড়ায় প্রতিদ্বন্দ্বী গ্রুপের মধ্যে হামলা ও গুলির ঘটনা ঘটে। এতে নিরীহ মানুষ গুলিবিদ্ধ হওয়াসহ ধারালো অস্ত্রের আঘাতের শিকার হচ্ছেন। সন্ত্রাসীদের ভয়ে ভুক্তভোগীর পরিবার মামলা করতে আগ্রহ দেখায় না। তবে বড় ধরনের হামলা হলে পুলিশ বাদী হয়ে মামলা করে। সম্প্রতি শমসের ও জয়নাল গ্রুপের মধ্যে দফায় দফায় হামলা ও গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। কথায় কথায় আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করে দুটি গ্রুপই।গত ৩ জুলাই ২০২৩ রাতে দুই গ্রুপের হামলায় চনপাড়ার বাসিন্দা হৃদয় হাসান (২২) মাথায় গুলিবিদ্ধ হন।

হৃদয়ের বাবা জলিল বলেন,চনপাড়ায় প্রায়ই হামলার ঘটনা ঘটে। গোলাগুলি হয়। আতঙ্কে আছি এলাকার সবাই।এছাড়াও ৩ জুলাই রাতে শমসের ও জয়নাল গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষে ইমান আলী নামে এক ব্যক্তি চোখের দৃষ্টি হারাতে বসেছেন। হামলার সময় একটি কাচের মার্বেল দ্রুত গতিতে ছুটে এসে লাগে তাঁর ডান চোখে। আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হতে হয় তাঁকে। এ বিষয়ে বাসের কাউন্টারের শ্রমিক সোহেল খান জানান, ডান চোখে দেখতে পারছেন না তিনি।

এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার গোলাম মোস্তফা রাসেল দৈনিক সকালের সময় কে বলেন, চনপাড়ায় অভিযান চালিয়ে অপরাধ দমন করে ক্লিন করেছি,এলাকাটি এখন পুলিশের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে,যারা অপরাধী তাদের আইনের আওতায় এনেছি। গত তিন দিন আগেও একটি ঘটনা ঘটেছে আমরা মামলা নিয়ে ৩ জনকে গ্রেফতার করেছি,যদি আরো কোন ভুক্তভোগী থাকে আমাদের কাছে আসলে মামলা নেব এবং আইনগত ব্যাবস্থা নেব,সেটা শমসের হোক কিংবা অন্য ইউপি মেম্বার হোক বা অন্য যে কেউ হোক না কেন?

কায়েতপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের ৯ নম্বর ওয়ার্ড মেম্বার শমসের আলীর মুঠোফোনে কল দিলে অন্য একজন রিসিভ করে বলেন উনার মোবাইল ফোনটি আমার কাছে।


এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ