এস এম মারুফ, স্টাফ রিপোর্টারঃ দেশের বৃহত্তর স্থলবন্দর বেনাপোল দিয়ে ভারতমুখি পাসপোর্ট যাত্রী সরকারি ভ্রমণকর পরিশোধ করলেও যাত্রী সেবার মান উন্নত করণে বেনাপোল পোর্ট কর্তৃপক্ষ যাত্রী প্রতি ৫৫ টাকা আদায় করলেও, আজও পাসপোর্ট যাত্রীর সেবার মান নিয়ে ভেতরে ভেতরে উত্তাপ্ত ভারতগামী পাসপোর্ট যাত্রীদের। এছাড়াও বাংলাদেশ সরকার যেখানে মরণব্যাধি সকল ক্যান্সার রোগীর ভ্রমণকর মওকুফ করেছেন, সেখানেও পোর্ট কর্তৃপক্ষের মন গলছে না মরণব্যধি এসব ক্যান্সার রোগীর ক্ষেত্রে। পোর্ট ট্যাক্স বাধ্যতা করে রেখেছেন ক্যান্সার, সদ্য ভূমিষ্ঠ্য বাচ্ছাসহ সকল ভারতগামী পাসপোর্ট যাত্রীদের।
বৃহষ্পতিবার (৬ জুন) বেনাপোল চেকপোস্ট আন্তজার্তিক প্যাসেঞ্জার টার্মিনালের সামনে সকাল থেকে ভারতগামী কয়েক হাজার পাসপোর্ট যাত্রী ঝুঁকি নিয়ে প্যাসেঞ্জার টার্মিনাল গন্ডি পেরিয়ে ঢাকা-কোলকাতা মহাসড়কে সারিবদ্ধ দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। এসময় কয়েক যাত্রীর মুখে শোনা যায় পোর্ট কর্তৃপক্ষ বাড়তি টাকা নিচ্ছে কিন্তু আমাদের সেবা কই? যতোবার যাচ্ছি দিয়ে যাচ্ছি কিন্তু আজও চোখে পড়ার মতো কোন সেবা পেলাম না।
ভারতে চিকিৎসা নিতে যাওয়া পাসপোর্ট যাত্রী শামিম বলেন, আমার মতো অনেক মেডিকেল ভিসার অসুস্থ যাত্রীরা প্রতিদিন চিকিৎসা সেবা নিতে ভারতে যাচ্ছে। এখানে এসে বাড়তি ৫৫ টাকা পোর্ট ফি দেওয়ার পরও রোদ-বৃষ্টি, ঝড় ও শীতে আমাদেরকে এভাবেই রাস্তায় দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। এটা এক প্রকার জুলুম। পোর্ট কর্তৃপক্ষ যাত্রী সেবার মান নিশ্চিত না করে এভাবে টাকা নেওয়া উচিত নয় বলেও তিনি অভিযোগ করেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, আন্তজার্তিক প্যাসেঞ্জার টার্মিনালের ঘা ঘেঁসা ও মহাসড়কের পাশে অবস্থিত চৌধুরী সুপার মার্কেট অধিগ্রহণের মাধ্যমে যাত্রী সেবার মান নিশ্চিত করতে দীর্ঘদিন বন্দর কর্তৃপক্ষ আইনি প্রক্রিয়া চালালেও বাস্তবায়নের মুখ আর যাত্রীদের সেবা নামে এক টুকরো সুখ আজও জোটেনি।
প্রতিটি পাসপোর্ট যাত্রী ৫৫ টাকা পোর্ট ফি দেওয়ার পরও আন্তজার্তিক প্যাসেঞ্জার টার্মিনাল ও মহাসড়কে দীর্ঘ সময় দাঁড়িয়ে থাকে এ থেকে মুক্তি পেতে বন্দর কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা গ্রহণ করছে কি-না তা মুঠোফোনে বন্দর পরিচালক মোঃ রেজাউল করিম এর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সব সময় এ সমস্যাটা হয় না। মাঝে মাঝে যাত্রীর চাপ থাকে তখন সিরিয়াল মেইনটেইনের জন্য যাত্রীদের অসুবিধা হয়। যেমন আজ দুপুরের পর যাত্রীর চাপ নাই। প্রচুর যাত্রীর যখন ভিড় থাকে তখন এই সমস্যা হয়। অনেক সময় জিরো পয়েন্ট থেকে ইন্ডিয়ান অংশ দ্রুত না টানার কারনে ওখানেও যাত্রীর চাপ থাকে ও অসুবিধার সৃষ্টি হয়। এছাড়াও যাত্রী সুবিধার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। এটা সম্পূর্ণ হলে যাত্রীর চাপ বেশি হলে সেখানে অবস্থান ও রেস্ট নিতে পারবেন।
ক্যান্সার রোগীর জন্য বাংলাদেশ সরকার ভ্রমণকর মওকুফ করলেও পোর্ট ট্যাক্স থেকে কেন তাদের মুক্তি মিলছে না? এমন প্রশ্নেও তিনি বলেন, আমাদের উর্দ্ধতন কর্মকর্তা পোর্ট ট্যাক্স অনুমোদন করে দিয়েছেন। সেটা যদি সরকার বাদ দেন তাহলে পোর্ট ট্যাক্স নেওয়া যাবে না, বাদ দেওয়া যাবে।
উল্লেখ্য, বেনাপোল-পেট্টাপোল স্খলপথে ভারতে যাবারকালে দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে থাকতে অসংখ্য পাসপোর্ট যাত্রী ইতিপূর্বে অসুস্থ হতে দেখা গেছে। অসুস্থ হয়ে বেশ কয়েকজন মারাও গেছেন। তবুও টনক নড়েনি স্থানীয় বন্দর কর্তৃপক্ষের।