বিশেষ প্রতিনিধিঃ নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে পুলিশ ও আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে বিএনপির নেতা-কর্মীদের সংঘর্ষের ঘটনায় তিন পুলিশ সদস্যসহ অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন।
মঙ্গলবার (৩১ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ৮টা থেকে ১০টা পর্যন্ত ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের পাঁচরুখী বাজার এলাকায় এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
আহত তিন পুলিশ সদস্য হলেন, পরিদর্শক হুমায়ুন কবির, সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) মোঃ মতিন ও কনস্টেবল মোঃ নুরুল।
নারায়ণগঞ্জের সহকারী পুলিশ সুপার আবির হোসেন বলেন, কনস্টেবল নুরুলের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাঁর মাথায় ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে জখম করা হয়েছে। পরিদর্শক হুমায়ুন কবিরের ডান হাত কুপিয়ে জখমের পর পিটিয়ে বাঁ হাত ভেঙে দেওয়া হয়েছে। এএসআই মতিনকে লাঠি ও ইটপাটকেল দিয়ে আঘাত করা হয়েছে। নুরুলকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং বাকি দুজনকে রূপগঞ্জের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। সেখান থেকে পরিদর্শক হুমায়ুন কবিরকে রাজধানীর জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠানে পাঠানো হবে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, টানা তিন দিনের অবরোধের সমর্থনে সকাল সাড়ে আটটার দিকে শত শত নেতা-কর্মী নিয়ে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে মিছিল করেন কেন্দ্রীয় বিএনপির আন্তর্জাতিক–বিষয়ক সহসম্পাদক নজরুল ইসলাম। এ সময় বিএনপির নেতা-কর্মীরা বাঁশের লাঠি, গাছের গুঁড়ি, আরসিসি খুঁটি ও টায়ারে আগুন জ্বালিয়ে সড়ক অবরোধ করে। এসময় পুলিশ তাঁদের বাধা দিলে উভয় পক্ষের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া হয়। পুলিশ বিএনপির নেতা-কর্মীদের উদ্দেশ্য করে রাবার বুলেট ও কাঁদানে গ্যাসের শেল ছুড়ে। অবরোধকারী নেতা-কর্মীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছুড়েন।
সংঘর্ষের একপর্যায়ে বিএনপির নেতা-কর্মীরা একজোট হয়ে পুলিশকে ধাওয়া দিয়ে তিনজন পুলিশ সদস্যকে তাঁরা ধরে ফেলেন। পরে তাঁদের কুপিয়ে ও পিটিয়ে জখম করেন তাঁরা।
এ সময় স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতা কর্মীরা পুলিশের সঙ্গে যোগ দেন। থানা থেকে আরও পুলিশ সদস্য ঘটনাস্থলে এলে বিএনপির নেতা-কর্মীরা সড়ক ছেড়ে চলে যান। সংঘর্ষের সময় ঢাকা-নরসিংদী সড়কে চলাচলকারী অন্তত তিনটি বাস ভাঙচুর করেন অবরোধকারী ব্যক্তিরা। প্রায় দেড় ঘণ্টা সংঘর্ষের পর পুলিশের চেষ্টায় সড়কে যান চলাচল শুরু হয়।
সংঘর্ষে বিএনপি’র ১৭ জন নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন বলে দাবি কেন্দ্রীয় বিএনপির আন্তর্জাতিক–বিষয়ক সহসম্পাদক নজরুল ইসলামের। তিনি বলেন, শুরুতে আমরা শান্তিপূর্ণভাবেই সড়কে মিছিল করছিলাম। পুলিশ বিনা কারণে আমাদের ওপর হামলা করে। পরে পুলিশের সঙ্গে আওয়ামী লীগের লোকজন যুক্ত হয়। তাঁরা আমার বাড়িঘরও ভাঙচুর করেছেন।
জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ আমির খসরু বলেছেন, বর্তমানে পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে আছে। এলাকায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। সংঘর্ষের সময় ঘটনাস্থল থেকে তিনজনকে আটক করা হয়েছে।