এমএম জামান,(ফরিদপুর) প্রতিনিধিঃ ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে যুদ্ধাপরাধী মামলার স্বাক্ষী ইউপি চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতার বাড়িতে ভাংচুর অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে।” পার্শ্ববর্তী সালথা থানার যদুনন্দী গ্রামের খারদিয়া গ্রামের কয়েক শত দুর্বৃত্ব ইউপি চেয়ারম্যানসহ তাদের পরিবারের ৫টি বাড়িতে ভাংচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করে।
বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) সকালে উপজেলার পরমেশ্বরদী ইউনিয়নের ময়েনদিয়া গ্রামে দফায় দফায় এ ঘটনা ঘটে।
সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে পুলিশ, সেনাবাহিনীর সদস্যরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এছাড়া ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা বসতবাড়ির আগুন নিয়ন্ত্রণে করে।
সরেজমিনে ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ফরিদপুরের সালথা উপজেলার যদুনন্দী ইউনিয়নের বারখাদিয়া গ্রামের বাসিন্দা ও মানবতা বিরোধী মামলার ফাঁসির দন্ডপ্রাপ্ত পলাতক আসামী মাওলানা আবুল কালাম আজাদ এর বিরুদ্ধে ওই মামলার সাক্ষী ছিলেন বোয়ালমারী উপজেলার পরমেশ্বর্দী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক আব্দুল মান্নান মাতুব্বর। তার সাক্ষ্যের ভিত্তিতে আবুল কালাম আজাদের ফাঁসির রায় হয় বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর। হামলার সময় মান্নান মাতুব্বর এবং পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা পালিয়ে নিজেদের আত্মরক্ষা করেন। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে ঘটনাস্থল এলাকায় সেনাবাহিনী, পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা রয়েছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক সুত্র জানায়, পূর্বের সেই সুত্র ধরে সকাল নয়টার দিকে বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী উপজেলার পরমেশ্বরদী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা মান্নান মাতুব্বরের বাড়িতে অতর্কিত হামলা চালায়।
এ সময় বসতবাড়ীতে থাকা মান্নান মাতুব্বরের বড় ছেলে হারেজ মাতুব্বর, মেজো ছেলে মজনু মাতুব্বর, ছোট ছেলে মাসুদ মাতুব্বরের বসতবাড়ীতে লুটপাট, ভাংচুর ও অগ্নি সংযোগ চালায়। পরে সেখান থেকে ফিরে এসে সালথা উপজেলার যদুনন্দী ইউনিয়নের খারদিয়া গ্রামের মান্নান মাতুব্বরের সমর্থক হাসেম মোল্যা, কালাম মোল্ল্যা, জালাল মোল্যা ও হবি মোল্ল্যার বাড়িতে অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট চালায় তারা। এ সময় বেশ কয়েকজন আহত হন। তবে প্রাথমিকভাবে আহতদের নাম পরিচয় জানা সম্ভব হয়নি। আহতদের উদ্ধার করে ফরিদপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজে পাঠানো হয়েছে। ইউপি চেয়ারম্যান ও আ’লীগ নেতা মান্নান মাতুব্বর এবং তার পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা পালিয়ে আত্মরক্ষা করায় তাদের বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।
এ ব্যাপারে বোয়ালমারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ গোলাম রসুল বলেন, আমি একটু ছুটিতে আছি। থানার সেকেন্ড অফিসারের সাথে যোগাযোগ করেন।
এ বিষয়ে বোয়ালমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তানভীর হাসান চৌধুরী বলেন, খবর পেয়ে সেনাবাহিনী, পুলিশ এবং আগুন নিয়ন্ত্রনের জন্য ফায়ার সার্ভিস কে জানানো হয়। সেনাবাহিনীর ৩ টি টিম ও থানা থেকে পর্যাপ্ত ফোর্স গিয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনে। এখন পর্যন্ত সংঘর্ষকারী কাউকে পাওয়া যায়নি। বর্তমানে সেখানে পুলিশ মোতায়ন রয়েছে, এখন সেখানকার পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। কোন হতাহতের ঘটনা জানা সম্ভব হয়নি।