এমএম জামান, ফরিদপুরঃ ফরিদপুর-১ আসনে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী, বোয়ালমারী উপজেলা বিএনপির সাবেক সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও বোয়ালমারী সরকারি কলেজের সাবেক ভিপি শামসুদ্দিন মিয়া ঝুনুর শোডাউনে হামলার ঘটনা ঘটেছে। ভাংচুর করা হয়েছে তার গাড়িসহ শোডাউন কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া ১০/১২ টি মোটরসাইকেল।
বুধবার (১৪ আগস্ট ) দুপুর দুইটার দিকে মধুখালী উপজেলার দীঘলিয়ায় এ হামলার ঘটে। এর জের ধরে বোয়ালমারীতে উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহবায়ক সঞ্জয় কুমার সাহার ব্যক্তিগত কার্যালয়ে পাল্টা হামলা চালিয়ে ভাংচুর ও দুই ছেলেসহ তাকে মারধর করে আহত করা হয়। পাল্টাপাল্টি এ হামলার ঘটনাকে কেন্দ্র করে বোয়ালমারী উপজেলা বিএনপির দু’গ্রুপের মধ্যে চাপা উত্তেজনা বিরাজ করছে।
জানা যায়, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে দলের মধ্যে নিজের সক্ষমতা ও প্রত্যাশার জানান দিতে হাজার খানেক মোটর সাইকেলের বিশাল বহর নিয়ে একটি শোডাউন কর্মসূচীর আয়োজন করেন শামসুদ্দিন মিয়া ঝুনু। শোডাউনটি সকাল ১০ টায় বোয়ালমারী চৌরাস্তা থেকে শুরু হয়ে প্রথমে আলফাডাঙ্গা প্রদক্ষিণ করে মধুখালী উপজেলার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয়। গাড়িবহরটি ঢাকা-মাগুরা মহাসড়কের মধুখালী উপজেলার রায়পুর ইউনিয়নের দীঘলিয়া পিকনিক কর্ণারের সামনে পৌছালে সামনের দিক থেকে আসা অজ্ঞাত পরিচয়ের শতাধিক দুর্বৃত্ত লাঠি-সোটা নিয়ে অতর্কীতে বহরে হামলা চালায়। তারা শামসুদ্দিন মিয়া ঝুনুকে বহনকারী নোহা ব্রান্ডের একটি মাইক্রোবাস এবং ১০/১২ টি মোটরসাইকেল ভেঙে গুড়িয়ে দিয়ে লাপাত্তা হয়ে যায়। এ ঘটনায় ঝুনু মিয়া ও তার সফরসঙ্গীরা নিরাপদ থাকলেও গাড়ীর চালক ও এক মোটরসাইকেল আরোহী আহত হন। তাৎক্ষণিক ভাবে ঝুনু সমর্থক বা শোডাউনকারীদের মাঝে তীব্র ক্ষোভ ও উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। এ সময় হামলাকারী সন্দেহে তারা স্থানীয় এক যুবককে পিটিয়ে আহত করে। পরে শামসুদ্দিন মিয়া মোটর শোভাযাত্রার বহর নিয়ে মধুখালী উপজেলা সদরের উপর দিয়ে গোহাইলবাড়ী হয়ে বোয়ালমারী পৌঁছান। এদিকে মধুখালীতে ঝুনু মিয়ার শোডাউনে হামলার খবর ছড়িয়ে পড়লে বোয়ালমারীতে তার কর্মী-সমর্থকরা উত্তেজিত হয়ে দলের আরেক মনোনয়ন প্রত্যাশী কেন্দ্রীয় কৃষকদলের সহসভাপতি খন্দকার নাসিরুল ইসলামের সমর্থক উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহবায়ক সঞ্জয় কুমার সাহার পৌর সদরের কামারগ্রাম নিউ মডেল প্রি ক্যাডেট স্কুলের পাশে অবস্থিত ব্যক্তিগত কার্যালয়ে পাল্টা হামলা চালিয়ে ভাংচুর এবং সেখানে অবস্থানরত সঞ্জয় সাহা ও তার দুই ছেলে রাজীব সাহা, সজীব সাহা এবং তাদের গাড়ির চালক মোঃ শহিদুল ইসলামকে পিটিয়ে আহত করে। এ সময় এলাকায় টহলরত সেনা সদস্যরা ঘটনাস্থল থেকে দুখু ও টুটুল নামে দুই যুবককে আটক করে বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান।
এ ব্যাপারে শামসুদ্দিন মিয়া ঝুনু বলেন, আমি সংসদ সদস্য প্রার্থী হওয়ায় খন্দকার নাসিরের গাত্রদাহ শুরু হয়ে গেছে। সে আমাকে দাবিয়ে রাখতে চায়। সে কারণেই খন্দকার নাসির আমার শান্তি পূর্ণ শোডাউনে হামলা চালিয়েছে। আমি এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই এবং এর জন্য তাকে চরম মূল্য দিতে হবে।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে সঞ্জয় কুমার সাহা বলেন, আমরা ঝুনু মিয়ার শোডাউনে হামলা করিনি। প্রতিহিংসা বশতঃ তারা আমাকে ও আমার নেতা খন্দকার নাসিরুল ইসলামকে দায়ী করছে। কেবল সন্দেহের বশেই ঝুনু মিয়ার সমর্থকরা আমার চেম্বারে হামলা চালিয়ে ভাংচুর করেছে, আমাকে ও আমার ছেলেদের মারধর করেছে।
অভিযোগের ব্যাপারে কেন্দ্রীয় কৃষকদলের সহসভাপতি খন্দকার নাসিরুল ইসলাম বলেন, ঝুনু মিয়া আমার অনেক জুনিয়র নেতা। তাকে আমি আমার প্রতিপক্ষই মনে করিনা কখনো। অতএব আমার লোকজন কেন তার শোডাউনে হামলা করতে যাবে। প্রতিহিংসা আর সন্দেহ থেকেই ঝুনু আমার নামে বদনাম রটাচ্ছে, আমার লোকজনকে মারধর করেছে। এটা খুবই দূঃখ জনক।
জানতে চাইলে বোয়ালমারী থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ শহিদুল ইসলাম বলেন, ঘটনার বিষয়ে আমি অবহিত আছি। তবে এখন পর্যন্ত কোন পক্ষ অভিযোগ দেয়নি। দু’পক্ষকেই শান্ত থাকার অনুরোধ জানিয়েছি।