ইসলামিক ডেক্সঃ জুমু’আর দিনে আল্লাহর ঘোষণা, হে ইমানদারগণ! যখন জুমু‘আর স্বলাতের আযান দেওয়া হয়, তখন আল্লাহর জিকির করতে (মাসজিদে) ছুটে আস, এবং ক্রয়-বিক্রয় বন্ধ কর, এটাই তোমাদের জন্য অতি উত্তম, যদি তোমরা জানতে ও বুঝতে পার। যখন স্বলাত শেষ হবে জিকিরের সাথে জীবিকার সন্ধানে জমিনে ছড়িয়ে পরো যাতে সফলকাম হতে পার। (সূরা জুমু’আ-৬২: ৯-১০)
জুম’আর দিনের ফজিলতঃ
রাসূল (সাঃ) বলেন , যে ব্যক্তি জুম’আর দিন গোসল করে সুগন্ধি মেখে মসজিদে এল ও সাধ্যমত নফল ছালাত আদায় করল, তার পরবর্তী জুম’আ পর্যন্ত এবং আরও ৩দিনের গোনাহ মাফ করা হয়। (বুখারী,মুসলিম,মিশকাত,হা/১৩৮১-৮২)।
রাসূল (সাঃ) আরও বলেন, যে ব্যক্তি জুম’আর দিন ভালভাবে গোসল করে ,অতঃপর সকাল সকাল মসজিদে যায় পায়ে হেটে ,গাড়ীতে নয় এবং আগে ভাগে নফল ছালাত শেষে ইমামের কাছাকাছি বসে ও মনোযোগ দিয়ে খুৎবার শুরু থেকে শুনে এবং অনর্থক কিছু করে না ,তার প্রতি পদক্ষেপে এক বছরের ছিয়াম ও ক্বিয়ামের অর্থাৎ দিনের ছিয়াম রাতের বেলায় নফল ছালাতের সমান নেকী হয়। (তিরমিযী,আবুদাউদ,নাসাঈ,ইবনু মাজাহ,মিশকাত হা/১৩৮৮)।
জুমু’আর দিনে করনীয় কিছু আমলঃ
মিসওয়াক করা/দাঁত ব্রাশ করা। (বুখারী-৮৪৩, মুসলিম-১৮৩৩, আবু দাউদ-৩৪৪, ইবনে মাজাহ-১০৯৮, নাসাঈ-১৩৭৮, মেশকাত-১৩৯৮)
* পুরুষজাতি সুগন্ধি/তেল ব্যবহার করা এবং মহিলারা সুগন্ধি ছাড়া মসজিদে যাওয়া। [বুখারি-৮৩৬/৮৩৯, মুসলিম-১৮৩৭]
* জুমু’আর স্বালাতে শীঘ্র উপস্থিত হওয়া। [বুখারি-৮৮২, মুসলিম-১৮৪১, তিরমিযী-৪৯৯]
* পায়ে হেঁটে মাসজিদে যাওয়া। [বুখারি-৮৬১/৮৬২, তিরমিজি-৪৯৬]
* মাজিদে ঢুকেই প্রথমে দুই রাকাত তাহিয়্যাতুল মসজিদ-এর স্বলাত আদায় করে তারপর বসা। [বুখারী-৯৩০, মুসলিম-১৮৯৭, তিরমিযী-৫১০]
* ইমামের কাছাকাছি বসার চেষ্টা করা। [আবু দাউদ-১১০৮]
* মসজিদে ঢুকে অন্যকে ডিঙিয়ে সামনে না যাওয়া।
[বুখারী-৮৬৪, আবু দাউদ-৩৪৩]
* খুৎবার সময় মুছল্লীদের তিনমাথা হয়ে (الْحَبْوَة) অর্থাৎ দুই হাঁটু উঁচু করে হাঁটুর মাঝে মাথা রেখে বসা নিষেধ। এতে ছতর খুলে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। [তিরমিযী, আবুদাঊদ, মিশকাত-১৩৯৩]
* দুই হাতকে পিছনে রেখে হাতের উপর ভর করে না বসা। এতে পিছনের মুসল্লির স্বলাতে ব্যঘাত ঘটে এবং তন্দ্রাচ্ছন্ন অবস্থায় বা হাত ফসকে পড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
* তন্দ্রার ভাব হলে স্থান পরিবর্তন করে বসা।
* চুপ থেকে মনোযোগ সহকারে খুত্বা শোনা। [বুখারি-৮৮৭, তিরমিযী-৫১২, মুসলিম-১৮৪২,১৮৬৫]
* দু’আ কবুলের বিশেষ মুহুর্তটি অন্বেষণ করা। [বুখারি-৮৮৮, মুসলিম-১৮৪৭, তিরমিযী-৪৮৯, আবু দাউদ-১০৪৮]
* সূরাহ কাহফ তিলাওয়াত করা। (হাকিম ২/৩৯৯, বায়হাকি ৩/২৪৯)
* নবী (ﷺ)-এর প্রতি বেশি বেশি দরূদ পড়া। (ইবন মাজাহ্-১০৮৫, আবু দাউদ-১০৪৭)
* মহান আল্লহ্ আমাদেরকে উপরোক্ত আমলগুলো করার তাওফিক দান করুন, কবুল, ক্ষমা এবং রহম করুন।
১. রাসূল (সঃ) বলেছেন”জুমুআর দিনে আমার উপর অধিক পরিমাণে দরুদ পাঠ করবে,কেননা দরুদ আমার নিকট পেশ করা হয়” (আবু দাউদ:১৫৩১)
২. রাসূল (সঃ) বলেছেন”যে ব্যক্তি আমার প্রতি দরুদ পাঠাতে ভুলে যায়, সে যেন জান্নাতের পথই ভুলে যায়। (ইবনে মাজাহ হাদীস:৯০৮)