শিরোনাম:
ডিবি পুলিশের হাতে জামায়াত নেতা’কে হত্যার ঘটনায় ৫ জন গ্রেফতার বেনাপোল স্থলবন্দর পরিদর্শন করলেন হাইওয়ে পুলিশের এডিশনাল ডিআইজি শাহিন ফরিদপুরে যথাযথ মর্যাদায় ঐতিহাসিক ৭ নভেম্বর উদযাপন সাবেক মন্ত্রী তরিকুল ইসলাম স্মরনে গাছের চারা বিতরণ আর ডি এইচ মেকওভার এন্ড স্কিন কেয়ার সেলুন এর ৪র্থ বর্ষপূর্তি উদযাপন  বেনাপোলে গাঁজা সহ মাদক কারবারি গ্রেফতার  ফরিদপুরে যুবদল নেতা পরিচয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের জায়গা দখল পাকা স্থাপনা নির্মাণ বেনাপোলে কম্বল, শাড়ি, ফেন্সিডিল ও মদ সহ মেহেরাব পরিবহন জব্দ  সরকারের যেকোনো প্রজেক্টের পেছনে একটা সৎ উদ্দেশ্য থাকে- এসিল্যান্ড ফারজানা বিক্রমপুর প্রেসক্লাবের কমিটি গঠন

ইসলামের দৃষ্টিতে প্রতিবেশীর ২০টি হক

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
আপডেটঃ : রবিবার, ১০ সেপ্টেম্বর, ২০২৩

ইসলামে প্রতিবেশীর প্রতি যথেষ্ট গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। কুরআন-সুন্নাহ প্রতিবেশির প্রতি করণীয় ও বর্জনীয় বিষয়ে অনেক কথা বর্ণিত হয়েছে।

১. আল্লাহ তাআলা বলেন,

وَاعْبُدُوا اللَّهَ وَلَا تُشْرِكُوا بِهِ شَيْئًا ۖ وَبِالْوَالِدَيْنِ إِحْسَانًا وَبِذِي الْقُرْبَىٰ وَالْيَتَامَىٰ وَالْمَسَاكِينِ وَالْجَارِ ذِي الْقُرْبَىٰ وَالْجَارِ الْجُنُبِ وَالصَّاحِبِ بِالْجَنبِ وَابْنِ السَّبِيلِ وَمَا مَلَكَتْ أَيْمَانُكُمْ ۗ إِنَّ اللَّهَ لَا يُحِبُّ مَن كَانَ مُخْتَالًا فَخُورًا

“আর আল্লাহর ইবাদত কর, আল্লাহর সাথে কাউকে শরিক করো না। পিতা-মাতার সাথে সদয় ব্যবহার কর এবং নিকটাত্মীয়, এতিম, মিসকিন, প্রতিবেশী, অসহায় মুসাফির এবং নিজের দাস-দাসীর প্রতিও। নিশ্চয়ই আল্লাহ দাম্ভিককে পছন্দ করে না।” [সূরা নিসা: ৩৬]

২. আবু হুরায়রা রা. হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,

«والله لايؤمن والله لايؤمن والله لايؤمن، قيل من يارسول الله؟ قال: الذي لايأمن جاره بوائقه »

“আল্লাহর শপথ সে মুমিন নয়! আল্লাহর শপথ সে মুমিন নয়!!আল্লাহর শপথ সে মুমিন নয়!

সাহাবিরা জিজ্ঞেস করলেন, কে সে লোক হে আল্লাহর রাসূল?

রাসূ্লুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, যে ব্যক্তির অনিষ্ট থেকে তার প্রতিবেশী নিরাপদ নয়”। [সহীহ বুখারি]

৩. আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, এক ব্যক্তি এসে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বলল,

إِنَّ فُلَانَةَ يُذْكَرُ مِنْ كَثْرَةِ صَلَاتِهَا، وَصِيَامِهَا، وَصَدَقَتِهَا، غَيْرَ أَنَّهَا تُؤْذِي جِيرَانَهَا بِلِسَانِهَا، قَالَ: «هِيَ فِي النَّارِ» ، قَالَ: يَا رَسُولَ اللهِ، فَإِنَّ فُلَانَةَ يُذْكَرُ مِنْ قِلَّةِ صِيَامِهَا، وَصَدَقَتِهَا، وَصَلَاتِهَا، وَإِنَّهَا تَصَدَّقُ بِالْأَثْوَارِ مِنَ الْأَقِطِ وَلَا تُؤْذِي جِيرَانَهَا بِلِسَانِهَا، قَالَ: «هِيَ فِي الْجَنَّةِ »

এক নারীর ব্যাপারে বলা হয় যে, সে বেশি বেশি সালাত পড়ে, রোজা পালন করে, দান-সদকা করে। কিন্তু মুখের ভাষায় প্রতিবেশীকে কষ্ট দেয় (তার অবস্থা কি হবে?)।

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, “সে জাহান্নামে যাবে”।

আরেক নারী বেশি নামাজ পড়ে না, খুব বেশি রোজাও রাখে না আবার তেমন দান সদকাও করে না; সামান্য দু-এক টুকরা পনির দান করে। তবে সে মুখের ভাষা দ্বারা প্রতিবেশীকে কষ্ট দেয় না (এই নারীর ব্যাপারে কি বলেন?)।

নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, “সে জান্নাতি”।

[মুসনাদে আহমদ, হাদিস: ৯৬৭৫; আল-আদাবুল মুফরাদ-বুখারি, হাদিস: ১১৯-সহিহ তারগিব, হা/২৫৬০]

৪. আয়েশা রা. হতে বর্ণিত, তিনি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জিজ্ঞাসা করলেন,

إِنَّ لِي جَارَيْنِ فَإِلَى أَيِّهِمَا أُهْدِي؟ قَالَ: «إِلَى أَقْرَبِهِمَا مِنْكَ بَابًا»

“আমার দু জন প্রতিবেশী আছে, তাদের কাকে আমি উপহার দেব?

রাসূল বললেন, যে তোমার দরজার কাছের প্রতিবেশী তাকে তুমি হাদিয়া দেবে”। [আহমদ-হা/২৫৪৬২; বুখারি-হা/২২৫৯।]

৫. আবু হুরাইরা রা. হতে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,

مَن كانَ يُؤْمِنُ باللَّهِ والْيَومِ الآخِرِ فَلْيَقُلْ خَيْرًا، أوْ لِيصْمُتْ، ومَن كانَ يُؤْمِنُ باللَّهِ والْيَومِ الآخِرِ فَلْيُكْرِمْ جارَهُ، ومَن كانَ يُؤْمِنُ باللَّهِ والْيَومِ الآخِرِ فَلْيُكْرِمْ ضَيْفَهُ.

“যে ব্যক্তি আল্লাহ ও আখিরাতের প্রতি ঈমান রাখে, সে যেন প্রতিবেশীকে কষ্ট না দেয়। যে আল্লাহ ও আখিরাতের প্রতি ঈমান রাখে, সে যেন মেহমানের সম্মান করে, যে আল্লাহ ও আখিরাতের প্রতি ঈমান রাখে, সে যেন ভালো কথা বলে অথবা চুপ থাকে”। [বুখারি ও মুসলিম]

৬. রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,

عَنْ عَبْدِ اللهِ، أَنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «مَا زَالَ جِبْرِيلُ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يُوصِينِي بِالْجَارِ، حَتَّى ظَنَنْتُ أَنَّهُ سَيُوَرِّثُهُ – أَوْ قَالَ: خَشِيتُ أَنْ يُوَرِّثَهُ – »

“জিবরীল আলাইহিস সালাম আমাকে প্রতিবেশীর হকের ব্যাপারে এত বেশি তাকিদ করেছেন যে, আমার কাছে মনে হয়েছে প্রতিবেশীকে মিরাসের অংশীদার বানিয়ে দেওয়া হবে”। [সহীহ বুখারি ও মুসলিম]

ইসলামের দৃষ্টিতে তাদের কতিপয় হক উল্লেখ করা হল:

১. তাকে কষ্ট দেয়া থেকে বিরত থাকা।

২. সে কষ্ট দিলে যথাসম্ভব ধৈর্য ধারণ করা

৩. তার প্রতি দয়া ও বন্ধুত্ব সুলভ আচরণ করা

৪. তাকে সম্মান করা

৬. বিপদাপদে সাহায্য করা।

৭. তার সাথে যথাসম্ভব বিবাদে লিপ্ত না হওয়া

৮. রোগ-ব্যাধিতে দেখতে যাওয়া বা প্রয়োজনীয় সেবা করা

৯. দেখা হলে হাসি মুখে কথা বলা

১০. সালাম লেনদেন করা

১১. মারা গেলে কাফন-দাফন ও জানাজায় অংশ গ্রহণ করা।

১২. কেউ তার ক্ষতি করতে চাইলে যথাসম্ভব প্রতিহত করা

১৩. তার সাথে ভালবাসা পূর্ণ সম্পর্ক রাখা

১৪. ক্ষতিকর কিছু ঘটলে যথাসাধ্য সাহায্য করা ও সমবেদনা জানানো।

১৫. তার খুশিতে শরীক হওয়া।

১৬. মাঝে-মধ্য তাকে তার বাড়িতে উপহার পাঠানো

১৭. তার মাঝে শরিয়া বিরোধী কিছু দেখলে আন্তরিকভাবে নসিহত করা।

১৮. দীনী বিষয়ে না জানলে জ্ঞানদান করা।

১৯. কাফির হলে দ্বীনের দাওয়াত দেয়া।

২০. তার মধ্যে হঠাৎ ঘটে যাওয়া কোন ত্রুটি-বিচ্যুতি দেখলে তা লোক সম্মুখে প্রকাশ না করা এবং যথাসাধ্য গোপনে সংশোধন করার চেষ্টা করা ইত্যাদি।


এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ