বিশেষ প্রতিনিধিঃ কক্সবাজার সদর এলাকার ডাকাতি, ছিনতাই, ভাড়াটে সন্ত্রাসী হিসেবে পরিচিত দুইজন’কে ২ টি আগ্নেয়াস্ত্র ও ৯ রাউন্ড গোলাবারুদসহ গ্রেফতার করেছে র্যাব-১৫।
র্যাব জানায়, গত ০৯ মার্চ ২০২৪ তারিখ সময় আনুমানিক রাত ১১টার সময় কক্সবাজার সদর থানাধীন ঝিলংজা ইউপির ১নং ওয়ার্ডের অর্ন্তগত পশ্চিম লারপাড়া ইসলামাবাদ এলাকায় জোরপূর্বক ভূমি দখলকে কেন্দ্র করে দুই গ্রুপের মধ্যে একটি মারামারির ঘটনা ঘটে। বর্ণিত বিষয়কে কেন্দ্র করে কক্সবাজার সদর মডেল থানায় ৭ জন এর নাম উল্লেখ করে ও ৫/৬ জন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের নামে একটি মামলা রুজু হয়। ঐ ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই গত ১১ মার্চ মধ্য রাতে একদল সশস্ত্র সন্ত্রাসী প্রকাশ্যে বর্ণিত এলাকায় গোলাগুলি করে। সেই ঘটনার একটি ভিডিও ফুটেজ আমাদের নজরে আসে। উক্ত বিষয়টি সম্পর্কে অবগত হওয়া মাত্রই র্যাব-১৫, কক্সবাজার ছায়াতদন্ত শুরু করে এবং ঘটনার সাথে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত আসামীদের গ্রেফতারের লক্ষ্যে গোয়েন্দা তৎপরতা বৃদ্ধি করে। বর্ণিত গোলাগুলির ঘটনায় জড়িত অজ্ঞাতনামা আসামীদের নাম ঠিকানা ও তথ্য সংগ্রহসহ তাদেরকে গ্রেফতারের লক্ষ্যে আমরা কাজ শুরু করি। কিন্তু আসামীরা ঘটনার পরবর্তী সময়ে আত্মগোপনে চলে যায়। র্যাব-১৫, কক্সবাজার এর একটি চৌকস টিম গোয়েন্দা তথ্য ও প্রযুক্তিগত সহায়তার মাধ্যমে জানতে পারে যে, গোলাগুলির ঘটনায় জড়িত মোঃ জাহেদ হোসেন ও ইয়াছিন আরাফাত গত ১৫ এপ্রিল চকরিয়া হতে কক্সবাজার পৌরসভা এলাকার উদ্দেশ্যে আসছে। সেই মোতাবেক র্যাব-১৫ এর গোয়েন্দা টিম তাদেরকে গ্রেফতারের লক্ষ্যে তৎপর হয় এবং অভিযান পরিচালনা করে অদ্য ১৬ এপ্রিল আনুমানিক রাত ২.১০ ঘটিকার সময় কক্সবাজার জেলার সদর থানাধীন ঝিলংজা এলাকা হতে মোঃ জাহেদ হোসেন (২৫), পিতা- আব্দুল জলিল ও ইয়াছিন আরাফাত (২৬), পিতা- মোর্শেদ আলম, উভয় সাং-দক্ষিন রুমালিয়ার ছড়া, ৭নং ওয়ার্ড, থানা-সদর, জেলা-কক্সবাজারদ্বয়’কে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়।
গ্রেফতার পরবর্তী সময়ে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা জানায়, উপরোল্লিখিত পশ্চিম লারপাড়া ইসলামাবাদ এলাকায় প্রকাশ্যে গোলাগুলির ঘটনার সাথে তাদের সরাসরি সম্পৃক্ততা রয়েছে এবং ঐ ঘটনায় ব্যবহৃত দুটি অস্ত্র ও গোলাবারুদ তাদের হেফাজতে রয়েছে মর্মে তারা আমাদের নিকট স্বীকার করে। পরবর্তীতে ধৃত আসামীদের দেয়া স্বীকারোক্তি অনুযায়ী উক্ত ঘটনায় ব্যবহৃত অস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধারের নিমিত্তে ধৃত আসামীদেরসহ কক্সবাজার পৌরসভা ০৬ নং ওয়ার্ডের অর্ন্তগত দক্ষিন রুমালিয়াছড়া এলাকাস্থ কক্সবাজার জেলা কারাগারের উত্তর-পূর্ব পার্শ্বে মাটিয়াতলি এলাকার কাটা পাহাড়ের চূড়ায় অভিযান পরিচালনা করি। অতঃপর আনুমানিক রাত ৪.১০ ঘটিকার সময় উপস্থিত স্বাক্ষীদের সম্মুক্ষে এবং ধৃত আসামীদের দেখানো মতে কাটা পাহাড়ের চূড়ায় মাটির নিচে গর্তে গুজানো অবস্থা থেকে ১ টি বিদেশী পিস্তল, ১ টি দেশীয় তৈরী রিভলবার, ৯ রাউন্ড তাজা কার্তুজ ও ১ টি বাটন ফোন উদ্ধার করা হয়।
গ্রেফতারকৃত মোঃ জাহেদ হোসেন ভয়ভীতি প্রদর্শনের মাধ্যমে কক্সবাজারের বিভিন্ন নির্মাণাধীন ভবন থেকে নিয়মিত চাঁদা আদায় করে থাকে। তার বিরুদ্ধে কক্সবাজার সদর থানায় একটি হত্যা মামলাসহ রামু থানায় একটি ডাকাতির প্রস্তুতির মামলা রয়েছে। এলাকাবাসীর ভাষ্যমতে, সে কক্সবাজার পৌরসভা এলাকায় প্রায় সময় প্রকাশ্যে অস্ত্র নিয়ে ঘুরাঘুরি করে অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে অন্যায়ভাবে জোরপূর্বক নিরীহ মানুষের জমি অর্থের বিনিময়ে প্রভাবশালীরদের দখল করিয়ে দেয়। তার বিরুদ্ধে এলাকায় বিভিন্ন সময় প্রকাশ্যে গোলাগুলি করার অভিযোগ রয়েছে। স্থানীয় সন্ত্রাসী গ্রুপের লিডার সাদ্দাম জেলে থাকায় গ্রেফতারকৃত মোঃ জাহেদ হোসেন গ্রুপটির গ্রুপ লিডার হিসেবে নিয়োজিত রয়েছে।
গ্রেফতারকৃত ইয়াছিন আরাফাত সাদ্দাম বাহিনী গ্রুপের একজন সক্রিয় সদস্য। তার বিরুদ্ধে ডাকাতি, ছিনতাই, চাঁদাবাজি করার অভিযোগ রয়েছে। এছাড়াও সে বর্ণিত গ্রুপের গ্রুপ লিডার মোঃ জাহেদ হোসেন এর মূল সহযোগী হিসেবে কাজ করে থাকে।
গ্রেফতারকৃত ও পলাতকদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।