বিশেষ প্রতিনিধিঃ খুলনা জেলার বটিয়াঘাটায় চাঞ্চল্যকর কিশোরী গণধর্ষণের মূলহোতাসহ দুই আসামীকে গ্রেফতার করেছে র্যাব-৬।
ভিকটিম দর্জি কাজ করে পরিবারের সাথে বসবাস করে আসছিল। অনুমান ১ বছর পূর্বে অত্র গণধর্ষণ মামলার মূল হোতা নাজমুল গোলদার নামে জনৈক ব্যক্তির সহিত ভিকটিমের পরিচয় হয়। পরিচয়ের এক পর্যায়ে নাজমুল ভিকটিমকে প্রেমের প্রস্তাব দেয়। ভিকটিম প্রথমে রাজি না হলেও পরবর্তীতে তাদের মধ্যে প্রেমের সর্ম্পক গড়ে উঠে। এরই ধারাবাহিকতায় গত ২৩/১০/২০২৩ ভিকটিমকে কনসার্ট এ নিয়ে যাওয়ার কথা বলে রাতে নাজমুল গোলদার পূর্বপরিকল্পনা মোতাবেক ভিকটিমকে কৌশলে বটিয়াঘাটা থানাধীন ভগবতীপুর গ্রামস্থ কেঁচুরাবাদ সুইচ গেটের পাশে তার নিজ ঘেরের ভদ্রা নদীর চরে নিয়ে যায়। যেখানে পূর্ব থেকেই নাজমুল গোলদার তার অন্যান্য বন্ধুদেরকে ডেকে রাখে। এরপর নাজমুল ভিকটিমের সাথে বিভিন্ন ধরনের অশ্লিল আচরন করতে থাকে। তখন ভিকটিম নাজমুলকে এমন আচরন করার কারন জিজ্ঞেস করে এবং এমন আচরন না করার জন্য অনুরোধ করে।ভিকটিম তার এমন আচরন বুজতে পেরে সাহায্যের জন্য তার নিজ মোবাইল থেকে পরিচিত ব্যক্তিদের নিকট ফোন করার চেষ্টা করলে নাজমুল গোলদার তার ফোন ছিনিয়ে নেয়।
এসময় আসামী নাজমুল ভিকটিমের কোন কথায় কর্ণপাত না করে ভিকটিমকে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে জোরপূর্বক প্রথমে ধর্ষণ করে এবং পরবর্তীতে গনধর্ষনের মূলহোতা নাজমুল গোলদার এর পুর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী আসামী রাসেল শেখ, মৃত্যুঞ্জয় সরকার, মোঃ রুবেল শেখ, জুয়েল সরদার এবং আশিক পালাক্রমে ভিকটিমকে জোরপূর্বক গনধর্ষণ করে। ধর্ষণের পর বিষয়টি কাউকে না জানানোর জন্য আসামীরা ভিকটিমকে বিভিন্ন ভয়ভীতি দেখিয়ে পরদিন ২৪/১০/২০২৩ তারিখ মোটরসাইকেল যোগে ভগবতীপুর গ্রামস্থ কাটাবুনিয়া খেয়াঘাটে নামিয়ে দেয়।
ভিকটিম লোক-লজ্জার ভয়ে বিষয়টি গোপন রাখলেও পরবর্তীতে ভিকটিম নিজে বাদী হয়ে বটিয়াঘাটা থানায় উক্ত ধর্ষণের সাথে জড়িত আসামীদের বিরুদ্ধে গনধর্ষণ মামলা দায়ের করে। এমন নেক্কারজনক , জঘন্য ও ঘৃণিত গনধর্ষণের বিষয়টি বিভিন্ন মিডিয়াসহ সামাজিক মাধ্যমে প্রচারিত হয় ও জনমনে ব্যাপক চাঞ্চল্যর সৃষ্টি করে। ঘটনাটি জানতে পেরে র্যাব-৬ (সদর কোম্পানি) খুলনার একটি আভিযানিক দল ছায়াতদন্ত শুরু করে এবং ধর্ষণের সাথে জড়িত আসামীদেরকে গ্রেফতারের লক্ষ্যে গোয়েন্দা কার্যক্রম ও অভিযান অব্যাহত রাখে।
এরই ধারাবাহিকতায় র্যাব-৬ (সদর কোম্পানি) খুলনা এর একটি চৌকস আভিযানিক দল ১৯ নভেম্বর ২০২৩ ইং গোপন সংবাদ ও তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় নোয়াখালী জেলার চরজব্বার এলাকা থেকে গনধর্ষণের মূলহোতা নাজমুল গোলদার (৩০), পিতা- আমের আলী গোলদার, সাং- কল্যাণশ্রী, থানা- বটিয়াঘাটাকে এবং গনধর্ষণের অন্যতম সহযোগী রাসেল শেখ (২৮), পিতা- গফুর শেখ, সাং- রায়পুর, থানা- বটিয়াঘাটাকে একই তারিখ খুলনা জেলার ডুমুরিয়া এলাকা হতে গ্রেফতার করে।
উল্লেখ্য যে, মামলার অপর আসামী মৃত্যুঞ্জয় সরকার, পিতা- হরিদাস সরকার, সাং- ভগবতীপুর, থানা- বটিয়াঘাটা, জেলা- খুলনাকে গত ১৭ নভেম্বর ২০২৩ তারিখ বরিশাল জেলার নতুন বাজার এলাকা হতে গ্রেফতার করে থানায় হস্তান্তর করা হয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামীগণ গনধর্ষণের সাথে জড়িত থাকার বিষয়টি স্বীকার করে।
গ্রেফতারকৃত একজন আসামিকে বটিয়াঘাটা থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে এবং বাকি আসামীদ্বয়কে উক্ত থানায় হস্তান্তরের কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন।