বিশেষ প্রতিনিধিঃ আড়াইহাজারে মাকে আটকে রেখে মায়ের সামনে মেয়েকে গণধর্ষণ এর ঘটনায় জড়িত আসামী সুজনকে গ্রেফতার করেছে র্যাব-১১।
অনুসন্ধানে জানা যায় যে, নারায়ণগঞ্জ জেলার আড়াইহাজার থানার টেকপাড়া গ্রামের সেলিনা @ সেলি তার মেয়ে শান্তনা (২৫)কে একই থানার প্রবাসী রাসেল (৩২) এর সাথে বিবাহ দেন। ভিকটিম শান্তনার স্বামী প্রবাসে থাকায়, তিনি সন্তান নিয়ে বাবার বাড়ীতে অবস্থান করে আসছিলেন। ভিকটিম প্রায়ই বিভিন্ন জরুরী কাজে স্থানীয় এলাকার বাজারে আসা-যাওয়া করাকালে পথে বিবাদীগণ তাকে উত্ত্যক্তসহ বিভিন্ন কুপ্রস্তাব দিয়ে আসছিল। এতে সাড়া না দেয়ায় বিবাদীগণ ক্ষুব্ধ হয়ে চলতি বছরের ২২ সেপ্টেম্বর রাত ১টার দিকে ভিকটিমের মা প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে বসত ঘরের দরজার খুলে বাইরে গেলে বিবাদীগণ বসত ঘরে প্রবেশ করে। এরপর দুজন ভিকটিমের মাকে ধরে মারধর করে এবং বসত ঘরে নিয়ে মুখ বেধে রুমে আটকে রাখে। এতে ভিকটিম প্রতিবাদ করলে তাকে বিবাদীরা মারধর করে এবং তাদের সাথে থাকা ধারালো চাকু দ্বারা হত্যার ভয়ভীতি দেখিয়ে আশিক, সুজন, হিমেল ও এনামুল ভিকটিমকে জোরপূর্বক কয়েকদফা ধর্ষণ করে। একই সাথে আশিক, ছরহাব ও সুজন তাদের হাতে থাকা মোবাইলে ভিকটিমের নগ্ন ও আপত্তিকর ছবি ও ভিডিও ধারণ করে।
উক্ত বিষয়ে কারো কাছে নালিশ অথবা থানা পুলিশকে জানালে বিবাদীগণ উক্ত ছবি এবং ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল করার হুমকি দেয়। পরবর্তীতে ভিকটিম বিষ খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করলে তাৎক্ষণিকভাবে তাকে উদ্ধার করে আড়াইহাজার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে দ্রুত ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য রেফার্ড করে। এই ঘটনায় ধর্ষিতার মা সেলিনা @ সেলি বাদী হয়ে ৫ জনের নাম উল্লেখ করে আড়াইহাজার থানায় একটি নিয়মিত মামলা দায়ের করেন। মামলা রুজুর পর থেকে আসামী বিবাদীগণ আত্মগোপনে চলে যায়।
এই মামলা দায়ের পর হতে পলাতক আসামী সুজন (২৪)কে গ্রেফতারের লক্ষ্যে র্যাব-১১, নারায়ণগঞ্জ, সদর কোম্পানি এর একটি চৌকশ গোয়েন্দা টীম যথাযথ গুরুত্বের সঙ্গে তার অবস্থান শনাক্ত পূর্বক গ্রেফতারের চেষ্টা করে। পরবর্তীতে সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে গণধর্ষণ মামলার পলাতক আসামী সুজন (২৪), পিতা-মনির হোসেন, স্থায়ী সাং-টেকপাড়া (ইউনিয়ন সাতগ্রাম), থানা-আড়াইহাজার জেলা-নারায়ণগঞ্জ’কে শনাক্ত ও তার অবস্থান নিশ্চিত হয়ে ৪নভেম্বর নারায়ণগঞ্জ জেলার রূপগঞ্জ থানাধীন কাজীপাড়া এলাকা হতে আসামীকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়।
গ্রেফতারকৃত আসামীকে পরবর্তী আইনানুগ কার্যক্রমের জন্য নারায়ণগঞ্জ জেলার আড়াইহাজার থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।