নিজস্ব সংবাদদাতা: ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের নামের সাথে মিল রেখে ব্যবসায়ীদের লিগ্যাল নোটিশ পাঠাচ্ছে কিছু সংগঠন। হাতিয়ে নিচ্ছে মোটা অঙ্কের টাকা। অথচ প্যাডে উল্লেখ করা ঠিকানায় এদের কোনো কার্যালয় নেই। এমন একটি সংগঠনের বিরুদ্ধে এরইমধ্যে জিডি করেছে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর।
সংস্থাটির মহাপরিচালক এ এইচ এম সফিকুজ্জামান জানালেন, মামলার প্রস্তুতিও চলছে।
বাংলাদেশ ক্রেতা ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ ফাউন্ডেশন, রাজধানীর পুরানা পল্টনের ঠিকানা ব্যবহার করে সংগঠনটি কার্যক্রম চালাচ্ছে। তবে, নোটিশে উল্লেখ করা ঠিকানায় তাদের কার্যালয় নেই। এমনকি ভবন হিসেবে যে নাম ব্যবহার করা হয়, ওই এলাকায় সে নামে কোনো ভবনই নেই। এ ভুয়া সংগঠনের চেয়ারম্যান লায়ন নূর ইসলাম নামক এক ব্যক্তি। বিশেষ সূত্রে জানাযায়, সারা বাংলাদেশে এ ভুয়া সংগঠনের সাইনবোর্ড ব্যবহার করে বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে চাঁদাবাজি সহ বিভিন্ন অনিয়ম কার্যক্রম চালিয়ে আসছে বলে জানা যায়।তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় চাঁদাবাজির অভিযোগ আছে বলে এক ভুক্তভোগী জানান।
একই কাজ করেছে ‘ভোক্তা অধিকার সংরক্ষন কমিশন’। লেটার প্যাডে দেয়া ঠিকানা নয়াপল্টনের সুমাইয়া ম্যানশন। কিন্তু সেখানে তাদের কার্যালয় নেই। অথচ, প্রতারণা প্রতিরোধের স্লোগান দিয়ে একাধিক ব্যবসায়ীকে লিগ্যাল নোটিশ পাঠিয়েছে বাংলাদেশ ভোক্তা অধিকার কমিশন নামের এই সংগঠন। ডাকা হচ্ছে, শুনানির জন্য।ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, এসব ভুঁইফোড় সংগঠন স্রেফ হয়রানি করছে। কিন্তু নোটিশে দেয়া মোবাইল নম্বরে যোগাযোগ করলে তারা কোনো মন্তব্য করে না। একই অভিজ্ঞতা হয় যমুনা টেলিভিশনের। এটা কী বাংলাদেশ ভোক্তা অধিকার কমিশন, মুঠোফোনে এমন প্রশ্নে অপর প্রান্ত থেকে বলা হয়, কোথায় কল দিয়েছেন।
শুধু রাজধানী নয়, গেলো সপ্তাহে ভোক্তা অধিকার কমিশনের নোটিশ পেয়েছেন কুমিল্লার মিষ্টি মেলার নিটোল সাহা। সন্দেহ হলে তিনি যোগাযোগ করেন লাকসামের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সাথে। এরপর জানতে পারেন, নোটিশটি আসল ভোক্তা অধিকার থেকে পাঠানো হয়নি। নিটোল সাহা জানান, এক মাস আগে চিঠিটি আসে ডাকযোগে।
সম্প্রতি এ ধরনের লিগ্যাল নোটিশ পেয়েছেন অনেক ব্যবসায়ী। জরিমানার নামে বিকাশে তাদের কাছে টাকা দাবি করা হচ্ছে। এদের নোটিশ পর্যালোচনা করে দেখা যায়, সংগঠনের নাম ভিন্ন হলেও একই রকম ভাষা ব্যবহার হয়েছে সেসব নথিতে।
ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর বলছে, একই ধরনের নামে সংগঠন খুলে প্রতারণা করছে একটি চক্র। দ্রুত এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। এ এইচ এম সফিকুজ্জামান বলেন, বিভিন্ন জেলায় তারা মেম্বারশীপ দিয়েছে এবং অর্থের বিনিময়ে এটা করা হয়েছে। তাদেরকে আইডি কার্ড দিয়েছে। তা দিয়ে পরিদর্শক নাম ব্যবহার করে পুলিশকেও ভুল বুঝিয়ে অভিযান করা হচ্ছে। আমরা মানুষকে স্পষ্ট জানাতে চাই, ব্যক্তিগতভাবে লাভবান হওয়ার জন্য তারা মানুষকে প্রতারিত করছে।
এ ধরনের তৎপরতা নজরে এলে দ্রুত হটলাইন নম্বর ১৬১২১-এ যোগাযোগ।