বিশেষ প্রতিনিধিঃ দিনাজপুর হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (হাবিপ্রবি) বিভিন্ন আবাসিক হল থেকে বিপুল পরিমাণ দেশীয় অস্ত্র এবং মাদকদ্রব্য জব্দ করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার রাতে দিনাজপুর হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এর রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. সাইফুর রহমান সাংবাদিকদের এই তথ্য ৩১ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে নিশ্চিত করেছেন। তিনি তার প্রেরিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে প্রকাশ করেছেন, গত বুধবার বিকেলে হাবিপ্রবি’র কর্মরত শিক্ষক, শিক্ষার্থীদের সমন্বয়ে এক বৈঠক করেন। বৈঠকে চলমান সহিংস পরিস্থিতিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে অভিযানের বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। গত বুধবার রাত ও বৃহস্পতিবার সকাল থেকে রাত পর্যন্ত ছাত্রদের চারটি আবাসিক হলে শিক্ষার্থী ও শিক্ষকরা এই যৌথ অভিযান চালায়। এ সময় ওই হলগুলো থেকে বিপুল পরিমাণে সামুরাই, পেট্রোলবোমা, হকিস্টিক, রড, জিআই পাইপ ও মদের বোতল উদ্ধার করা হয়েছে। উদ্ধারকৃত এসব দেশীয় অস্ত্র ৩ দফার সেনাবাহিনীর কাছে জমা দেওয়া হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলেন, গত ১৮ জুলাই থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। একই সঙ্গে ওইদিন বিকেল ৩টার মধ্যে আবাসিক হলসমূহ ফাঁকা করার নির্দেশ দেয়া হয় শিক্ষার্থীদের। গত ১২ আগস্ট থেকে হলসমূহ খুলে দেয়ার কথা থাকলেও শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে হলসমুহ বন্ধ রাখা হয়। হলগুলোতে সাধারণ শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে পরবর্তীতে প্রতিটি হলে অভিযান চালানোর সিদ্ধান্ত নেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এ উদ্দেশ্যে সাধারণ শিক্ষার্থী এবং শিক্ষকদের সমন্বয়ে হল ভিত্তিক টিম গঠন করা হয়।
উদ্ধারকৃত দেশীয় অস্ত্র মধ্যে রয়েছে, বিভিন্ন ধরনের দেশীয় অস্ত্র ছিলো ১ হাজার ৩৫ টি। ১৫০টি হেলমেটও জব্দ করা হয়। সবচেয়ে বেশি ও সদ্য বানানো ধারালো অস্ত্র পাওয়া যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শেখ রাসেল হলে। এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের শেখ রাসেল হলের শুধু একটি অংশ নূর হোসেন ব্লক থেকে সামুরাই ৯৬টি, স্টিলের পাইপ ১৫৭টি, পেট্রোল বোমা চারটি, রড ৯২টি, স্ট্যাম্প ২৭টি উদ্ধার করা হয়। এছাড়াও সব হল থেকে প্রায় ১৫টি মদের বোতল এবং গাজা সেবনের উপকরণও উদ্ধার করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের বিভিন্ন রাজনৈতিক গ্রুপের মধ্যে মারামারি কিংবা সংঘর্ষের সময় এগুলো ব্যবহার করা হতো বলে ধারণা করা হচ্ছে।
বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা ফয়সাল হাবিব জানান, সাধারণ শিক্ষার্থী এবং দেশে চলমান বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ঠেকাতেই বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের এই বিরাট আয়োজন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
উদ্ধার অভিযান শেষ করার পর এসব জব্দকৃত অস্ত্রসমূহ বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. সাইফুর রহমান মারফত সেনাবাহিনীর কাছে তিনদফায় হস্তান্তর করা হয়েছে। সাধারণ শিক্ষার্থীদের জন্য হলসমূহ খুলে দেওয়া হয়। এসময় প্রতিটি হলের সার্বিক নিরাপত্তার জন্য শিক্ষক এবং কর্মকর্তাদের সমম্বয়ে হলভিত্তিক টিম গঠন করে দেওয়া হয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে।