সরকারি রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে অবৈধভাবে চোরাই পথে পাশ্ববর্তী দেশে পাচারকালে বিপুল পরিমাণ মালামালসহ আটক-২

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
আপডেটঃ : মঙ্গলবার, ১৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪

বিশেষ প্রতিনিধিঃ সরকারি রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে সমুদ্রের বিভিন্ন চ্যানেল ব্যবহার করে অবৈধভাবে চোরাইপথে পার্শ্ববর্তী দেশে ভোগ্যপণ্য পাচারকালে কক্সবাজারের টেকনাফ থানাধীন হাতিয়ারঘোনা এলাকা থেকে ৪,৪৭০ লিটার ভোজ্য তেল সয়াবিন, বিভিন্ন প্রকারের ১,৩৬,৫৫০ পিস ঔষধ ও ৫০০ কেজি ময়দা জব্দসহ পাচার চক্রের দুইজনকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-১৫।
সাম্প্রতিক সময়ে কক্সবাজার জেলার সমুদ্রের বিভিন্ন চ্যানেল ব্যবহার করে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী ও  পাচারকারী ভোজ্য তেল সয়াবিন’সহ বিভিন্ন নিত্য প্রয়োজনীয় ভোগ্যপণ্য, জ্বালানী তৈল ও ডিজেল অবৈধভাবে চোরাচাইপথে পার্শ্ববর্তী দেশে পাচার করছে। এতে করে একদিকে সরকার কোটি কোটি টাকার রাজস্ব হারাচ্ছে। একই সাথে দেশীয় উপরোল্লিখিত খাদ্যদ্রব্য, অকটেন, ডিজেল ইত্যাদি দেশ হতে অন্য দেশে পাচার হওয়ার কারণে দেশে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি হচ্ছে। সরকারি রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে পার্শ্ববর্তী দেশে বিভিন্ন নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি পাচারের বিষয়টি র‌্যাব-১৫ এর নজরে আসায় এই চক্রের সদস্যদের গ্রেফতার এবং পাচার রোধে র‌্যাবের গোয়েন্দা নজরদারি ও তৎপরতা বৃদ্ধি করা হয়।
চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে অবৈধভাবে পাশ্ববর্তী দেশে পাচার রোধে র‌্যাব-১৫, কক্সবাজার কর্তৃক পরিচালিত অভিযানে সর্বমোট ০৯ জন পাচারকারীকে গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় নিয়ে আসে। একই সাথে তাদের হেফাজত হতে উদ্ধার করা হয় সর্বমোট ৫,৩৮৫ লিটার অকটেন, ৪০ কেজি পেঁয়াজ, ৩১ কেজি রসুন, ৩৬ কেজি আদা উদ্ধার এবং পরিবহন কাজে ব্যবহৃত ২টি পিকআপ, নগদ ১৮,১০০/- (আঠার হাজার একশত টাকা), ৩টি বাটন ও ৪টি স্মার্ট ফোন জব্দ করা হয়।
এ ধরণের গর্হিত অপরাধ রোধকল্পে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে র‌্যাব জানতে পারে, সরকারি রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে অবৈধভাবে অন্য দেশে পাচারের উদ্দেশ্যে কতিপয় পাচারকারী ভোজ্য তেল সয়াবিন’সহ বিভিন্ন নিত্য প্রয়োজনীয় ভোগ্যপণ্য নিয়ে কক্সবাজার জেলার টেকনাফ থানাধীন টেকনাফ সদর ইউনিয়নের হাতিয়ারঘোনা এলাকায় জনৈক আবুল বাশার হাজির মুরগির খামার সংলগ্ন ভিটা এলাকায় অবস্থান করছে। বর্ণিত সংবাদের ভিত্তিতে গত ১২ ফেব্রুয়ারি সাড়ে ৫টার দিকে র‌্যাব-১৫, সিপিসি-১, টেকনাফ ক্যাম্পের চৌকস আভিযানিক দল উক্ত এলাকায় একটি বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে। এ সময় র‌্যাবের আভিযানিক দলের উপস্থিতি বুঝতে পেরে কৌশলে পলায়নের চেষ্টাকালে দুইজন পাচারকারীকে গ্রেফতার করা হয়।
পরবর্তীতে উপস্থিত সাক্ষীদের সম্মুখে ১টি জীপ গাড়িসহ সর্বমোট ৮৯৫টি বোতলে ৪,৪৭০ (চার হাজার চারশত সত্তর লিটার) লিটার ভোজ্য তেল সয়াবিন, বিভিন্ন প্রকারের ১,৩৬,৫৫০ (এক লক্ষ ছত্রিশ হাজার পাঁচশত পঞ্চাশ) পিস ঔষধ ও ১০টি বস্তায় মোট ৫০০ (পাঁচশত) কেজি ময়দা উদ্ধার করা হয়। যার আনুমানিক বাজার মূল্য ১১,৮০,০০০/- (এগার লক্ষ আশি হাজার টাকা)।
আটককৃত আসামি- কক্সবাজারের টেকনাফ থানাধীন টেকনাফ সদর ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের হাতিয়ার ঘোনা গ্রামের আবুল বশরের ছেলে আবদুল মান্নান (২৪) ও একই এলাকার মৃত হাছন আলীর ছেলে আলী হোসেন (৪৫)।
ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে তারা জানায়, সাম্প্রতিক সময়ে পার্শ্ববর্তী দেশে যুদ্ধাবস্থার কারণে দেশটিতে তৈল, ঔষধ এবং খাদ্যদ্রব্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ব্যাপক ঘাটতি এবং দ্রব্যমূল্যের প্রচন্ড উর্ধ্বগতি দেখা দেয়। এই উদ্ভুত পরিস্থিতিকে কাজে লাগিয়ে তৈলসহ বিভিন্ন খাদ্যদ্রব্য বাংলাদেশ থেকে কম মূল্যে ক্রয় করে উচ্চ দামে কক্সবাজার জেলার সমুদ্রের বিভিন্ন চ্যানেল ব্যবহার করে পার্শ্ববর্তী দেশে পাচার করে আসছিল। বিনিময়ে নগদ টাকার পাশাপাশি তারা ইয়াবাসহ অন্যান্য মাদকদ্রব্য বাংলাদেশে নিয়ে আসতো বলে জানায়।
গ্রেফতারকৃত চোরাকারবারীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।


এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ