প্রিন্ট এর তারিখঃ ডিসেম্বর ২৪, ২০২৪, ৬:০৪ এ.এম || প্রকাশের তারিখঃ আগস্ট ২৯, ২০২৪, ৫:৫৮ অপরাহ্ণ
বেনাপোল চেকপোষ্ট কাস্টমস কর্মকর্তাদের সহয়তায় ভারতে পালাচ্ছে অপরাধীরা। সিসি ক্যামেরায় ধরা।
এস এম মারুফ, স্টাফ রিপোর্টার: সাবেক প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতা ছেড়ে ভারতে আশ্রয় নেওয়ার পর থেকে দেশটিতে পালাতে শুরু করেছে নানান অপরাধীরা। এতে রুট হিসাবে বেশি ব্যবহার করছে বেনাপোল সীমান্ত। তবে অপরাধীদের পালানো রোধে সীমান্তে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা জোরদার করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ বিজিবি।
ভারতে ঢোকার আগে বিজিবি,পুলিশ, এনএসআই ও ডিজিএফ আই সদস্যরা সন্দেহ ভাজনদের জিঞ্জাসাবাদ করছেন। এতে গেল এক সপ্তাহে বেনাপোল ইমিগ্রেশন কাস্টমস থেকে ৩ জন আটক হয়েছে। তবে যারা সাধারন যাত্রী তাদের যাতায়াতে কোন সমস্যা নাই। এদিকে ইমিগ্রেশন চেকপোষ্টে কাস্টমসের দূর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের সহযোগীতায় অনেক অপরাধীরা পালানোর সুযোগ পাচ্ছে অভিযোগ উঠেছে।
জানা যায়, ছাত্র, জনতার বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের মুখে গত ০৫ আগস্ট ক্ষমতা হস্তান্তর করে ভারতে রাজনৈতিক আশ্রয়ে চলে যায় সাবেক প্রধান মন্ত্রি শেখ হাসিনা। এর পর থেকে নানান অনিয়ম,দূর্নীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহারের সাথে জড়িত রাজনৈতিক নেতা,সরকারি ও প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়। বিদেশ ভ্রমনে দেওয়া হয় নিষেধাজ্ঞা। এতে সীমান্তে বিজিবি সর্বচ্ছ নিরাপত্তা জোরদার করে। সীমান্ত পথের পাশাপাশি ইমিগ্রেশন কাস্টমসে পুলিশ ও সরকারের বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থ্যার সাথে যাত্রীদের উপর নজরদারি শুরু করে। এতে গেল এক সপ্তাহে ৩ জন আটক হয় বিজিবির হাতে।
তবে বিজিবি সতর্ক থাকলেও চেকপোষ্ট কাস্টমসের অসাধু কর্মকর্তাদের সাথে সক্ষতা করে অনেকে পালিয়ে যাচ্ছে ভারতে। গত ২৩ আগস্ট কাস্টমসে একটি বন্ধ গেট খুলে যশোর জেলা ছাত্র লীগের সাধারন সম্পাদক তানজিদ নওশাদ পল্লবকে ভারতে পালানোর সহযোগীতা করে কাস্টমস সুপার সিবলী নোমানও কামরুন্নাহার। এসময় বিজিবির সন্দেহ হলে জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে তাকে আটক করে। অবৈধ ভাবে গেট খুলে প্রবেশের ঘটনা ধরা পড়ে সিসি ক্যামেরাই। এদিকে বিভিন্ন পরিচয়ে পাসপোর্ট যাত্রী ছাড়াও ইমিগ্রেশন কাস্টমস ভবনে বহিরাগতদের বিচারণ রয়েছে। এদের মাধ্যমে ও নানান অনিয়ম ঘটছে অভিযোগ রয়েছে। তবে এসব নিয়ে মাথা ব্যাথা নেই সংশিষ্ট কর্তৃপক্ষের।
বেনাপোল চেকপোস্ট কাস্টমস হাউসের সুপারেন্টেন্ড মোকলেছুর রহমান জানান, তাদের দুই সহকর্মীর কথায় কাস্টমসের এনজিও অনিমা বন্ধ গেট খুলে দিয়ে ঐদিন ৫ জন পাসপোর্টধারীকে ইমিগ্রেশন ভবনে ঢোকায়। এদের মধ্যে এক জন ছিলেন জেলা ছাত্রলীগের সেক্রেটারি। সিসি ক্যামেরাই সেটা দেখা গেছে। তবে বিষয়টি কাস্টমসের উধ্বতন কর্মকর্তারা খতিয়ে দেখছেন। এ ঘটনার পর থেকে ঐ গেটটি সম্পূর্ন বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
পাসপোর্টধারী প্রবির মিত্র জানান, পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থ্যার জিজ্ঞাসাবাদের পর ভারতে ঢোকার অনুমতি হচ্ছে তাদের।
স্থানীয় ব্যবসায়ী কামাল হোসেন জানান, নিয়ম রয়েছে প্যাসেঞ্জার টার্মিনাল ভবনে কর্তব্যরত বন্দর ও কাস্টমস কর্মকর্তা, পুলিশ ও বিজিবি সদস্যদের পাসপোর্ট দেখিয়ে পরে যাত্রীরা ভারতে ঢুকবে। কিন্তু শুন্য রেখায় বন্ধ থাকা ইমিগ্রেশন গেট খুলে আত্মীয় পরিচয়ে ভারতে পারাপার করে কর্মকর্তারা। এতে ঐ যাত্রীর ভ্রমন ট্যাক্স কেটেছে কিনা বা যাত্রীর ব্যাগ তল্লাশীর সুযোগ আর থাকেনা। এভাবে দির্ঘদিন ধরে অনিয়মন হয়ে আসলেও দেখার কেউ নেই।
৪৯ ব্যাটালিয়ন বিজিবি অধিনায়ক সাইফুল্লা সিদ্দিকী জানান, অপরাধীরা যাতে ভারতে পালাতে না পারে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। অনান্য সংস্থ্যার পাশাপাশি বিজিবি সদস্যরা ইমিগ্রেশনে পাসপোর্টধারীদের নজরদারিতে রাখছে।
দূনীতি দমন প্রতিরোধ কমিটি শার্শা উপজেলা শাখার সদস্য, রুবেল হোসেন জানান, কাস্টমসের কিছু অসাধু কর্মকর্তারা অপরাধীদের ভারতে পালাতে সহযোগীতারা করে বড় অংকের অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে। তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত সাপেক্ষে আইনী ব্যবস্থা নিতে হবে।
উল্লেখ্য, গত এক সপ্তাহে আটকরা হলেন, যশোর জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তানজিব নওশাদ পল্লব, ঢাকার নবাবগঞ্জ থানা ছাত্রলীগের সভাপতি সজিব হালদার ও ছুটি না নিয়ে পরিচয় গোঁপন করে ভারতে যাবার সময় বিজিবি সদস্য শাওন ঘোষকে আটক করা হয়।
Copyright © 2024 samajerchoke.com. All rights reserved.