প্রিন্ট এর তারিখঃ ডিসেম্বর ২৪, ২০২৪, ৬:০৪ এ.এম || প্রকাশের তারিখঃ আগস্ট ২৫, ২০২৪, ২:০০ অপরাহ্ণ
পুলিশের বিরুদ্ধে মামলা, নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন যুবদল নেতা মতিউর রহমান সাগর
এম রাসেল সরকার: সাবেক কাউন্টার টেরোরিজম (সিটিটিসি) প্রধান এবং অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মো. আসাদুজ্জামানসহ তিন পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা করার পর থেকে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন বাদী যুবদল নেতা মতিউর রহমান সাগর (৪৭)। বাদী অভিযোগ করেছেন, মামলা করার পর থেকেই বিভিন্ন মোবাইল নম্বর থেকে ফোন দিয়ে হুমকি দেওয়া হচ্ছে। মামলা তুলে নিয়ে আপস করার জন্যও চাপ দেওয়া হচ্ছে।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার (২২ আগস্ট) মামলার বাদী নড়িয়া উপজেলা যুবদলের সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাবেক ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মতিউর রহমান সাগর ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে (সিএমএম) পাঁচজনকে আসামি করে পিটিশন দায়ের করলে আদালত তিন আসামিকে আমলে নিয়ে মতিঝিল থানাকে মামলাটি এজাহার হিসেবে গ্রহণ করতে নির্দেশ দেন। মামলার অপর দুই আসামি হলেন, সিটিটিসির কর্মকর্তা সাবেক অতিরিক্ত উপকমিশনার আতিকুর রহমান এবং সাবেক সহকারী পুলিশ কমিশনার শফিকুল ইসলাম।
মামলার আবেদনে বাদী অভিযোগ করেন, ২০২২ সালের ১৮ মে দুপুর ২টার দিকে বাদীকে মতিঝিল হোটেল শাকিল ইন্টারন্যাশনাল থেকে জোর করে তুলে মিন্টো রোডের ডিবি কার্যালয়ে নিয়ে যায় আসামিরা। সেখানে নিয়ে গিয়ে ২৪ মে (৭ দিন) পর্যন্ত বাদীকে বন্দি করে রাখা হয় এবং নির্যাতন করা হয়। এ সময় আসাদুজ্জামানের নেতৃত্বে অন্য আসামিরা বাদীর কাছে এক কোটি টাকা চাঁদা দাবি করেন। চাঁদা না দিলে জঙ্গি হিসেবে ক্রসফায়ারের ভয় দেখানো হয়।
পরে জীবন বাঁচানোর জন্য বাদী তার ম্যানেজার মাসুদ দেওয়ানের সহযোগিতায় বিগত ওই বছরের ২২ মে সাবেক সহকারী পুলিশ কমিশনার শফিকুল ইসলামের কাছে ৫০ লাখ টাকা তুলে দেন।
বাকি ৫০ লাখ চাঁদার টাকার জন্য আসামিরা ২৪ মে পর্যন্ত মিন্টো রোডের টর্চার সেলে বাদীকে আটকে রেখে নির্যাতন করে। সে সময় বাদীর নিখোঁজের খবর পেয়ে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী একটি প্রেস ব্রিফিং করলে আসামিরা বাদীকে নড়িয়া থানায় পাঠিয়ে দেয়। এরপর বাকি ৫০ লাখ টাকার জন্য অমানবিক নির্যাতন করে এবং শরীয়তপুর আদালতে একটা মিথ্যা মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে চালান করে।
বাদী মতিউর রহমান সাগর আরও অভিযোগ করেন, যে মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে চালান করা হয়, সে মামলাটি সংঘটিত হওয়ার সময়ে তিনি ওমরাহ-হজ পালনের জন্য সৌদি আরবে ছিলেন এবং ওই ঘটনা নিয়ে সে সময়ে বিভিন্ন জাতীয় পত্রিকায় নিউজ ছাপা হয়। একপর্যায়ে তাকে চাঁদার জন্য শেরেবাংলানগর থানায় একটা জঙ্গি মামলায় সন্দেহভাজন আসামি দেখিয়ে বিদেশ যাওয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয়। পরে তিনি হাইকোর্টের রিট দায়েরের মাধ্যমে বিদেশ যাওয়ার অনুমতি গ্রহণ করেন।
হুমকির বিষয়ে মতিউর রহমান সাগর বলেন, মামলা করার পর কয়েকজন পুলিশ অফিসার দিয়ে আমাকে ফোন করানো হয়। আমি যেন মামলা তুলে নিয়ে আপস করি সেই কথা বলা হয়। কিন্তু আমি রাজি হইনি। আমার নামে এর আগে কিছু মিথ্যা মামলা ছিল। সেসব মামলায় আমাকে গ্রেপ্তার করা হবে বলেও হুমকি দেওয়া হয়েছে। আমি নির্যাতনের স্বীকার হয়েছি, আমি কোনো আপসে যাব না। আমি এসব পুলিশ কর্মকর্তার বিচার চাই।
Copyright © 2024 samajerchoke.com. All rights reserved.